১। ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত করোনা বিশ্ব দাপাতে পারে,আশাবাদী যে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বা তারও আগে এর প্রতিষেধক হাতে হাতে চলে আসবে তাই এই অল্প সময়ে কষ্ট হলেও বিশ্বে দূরভিক্ষ বা খাদ্য ঘাটতি হবে না তাই বাসায় অতিরিক্ত খাদ্য মজুদের দরকার নেই। ইমাম মেহেদীর আগমনের পূর্বে একটি দূরভিক্ষ হবে, কিন্তু এই বছরই সেটা নয়।
২। বিশ্ব নেতৃত্বে চীন আরও একধাপ এগিয়ে গেল, করোনার প্রতিষেধক ও সেবা বা ব্যাবসায়ী কর্যক্রমে পশ্চিমাদের পিছনে ফেলে চীন সবার আগে মন্দা কাটাতে পারবে তাই ২০২১ সাল থেকেই চীন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়াকেও চোখ রাংগিয়ে কথা বলবে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাটিগুলোতে যেখানে অসহায়ত্ব ও হাহাকার চলছে, চীন সেখানে প্যাসিফিক ওশান তথা দক্ষিণ ও পূর্ব চীন সাগরে আধিপত্য বজায় রাখছে। তাই বলা যায় বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থা এক মেরু থেকে বহু মেরু করনে পূর্নতা লাভ করল। ( Unipolar to Multipolar World System)
৩। পরবর্তী বিশ্ব যুদ্ধ ও রাজনীতি হবে ধর্ম কেন্দ্রীক,তাই ইজরাইল ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ত্রিমাত্রিক আতাত হতে পারে। এই ৩ দেশকে ইউরোপের দেশগুলো সমর্থন দিবে অন্যদিকে চীন ও রাশিয়া মুসলিম বিশ্বের পক্ষে থাকতে পারে, যা স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব ব্যবস্থা দেখেই বুঝতে পারছি। তারমানে স্যামুয়েল হ্যান্টিংটনের A clash of civilization বইয়ের গবেষণা অনেকটাই বাস্তবিক রুপ লাভ করতে যাচ্ছে।
৪। বাংলাদেশে নারী নেতৃত্বের অবসান হয়ে অচিরেই পুরুষরা দেশ পরিচালনার নেতৃত্ব দিবেন। প্রাচিন যুগের মৌর্য,গুপ্ত,পাল,সেন। মধ্যযুগের সুলতানি,মুঘল, কররানি,সুবেদারী,নবাবী৷ আধুনিক যুগের কোম্পানি, ও বৃটিশ শাসনের মধ্যে শুধুমাত্র ১ জন নারী সুলতানা রাজিয়া(১২৩৬-১২৪০ সাল পর্যন্ত )উত্তরাধীকার সূত্রে ক্ষমতা লাভ করেন,তাই বলা যায় খালেদা হাসিনার পরে জনগন আর কোন নারীকে উত্তরাধীকার হিসেবে ক্ষমতায় বসাবেন না। জানেনতো বিশ্বের পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া), চীনে কখনোই নারীরা নেতৃত্ব দেয়নি।
৫। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির একটি অঘোষিত কালচার হচ্ছে ভারত, খুব দ্রুত ভারতমুখী নীতি থেকে বের হয়ে, চীন পাকিস্তান আফগানিস্তান ও ইরানের সাথে আঞ্চলিক সামরিক জোট গঠন করা, কারন ইরান ব্যতিত এ দেশগুলো ভারতের শত্রু, এখনই এই জোট করতে পারলে ভারত, বাংলাদেশ পাকিস্তান ও কাশ্মীরকে দখল করে অবিভক্ত ভারতের স্বপ্ন দেখবে না। আপনি ভাবছেন পাকিস্তানের সাথে আমরা জোট করি কিভাবে? তাহলে আপনি ইতিহাস দেখেনঃ
(ক) ১৭৭৬ সাল থেকে ১৭৮০ সাল পর্যন্ত USA & UK যুদ্ধ করেছে, USA ‘ র স্বাধীনতা বিষয়ে, এখন USA & UK সবচেয়ে ভালো বন্ধু। (খ) ২য় বিশ্বযুদ্ধে জাপান ১৯৪১ সালে USA ‘ র হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে আক্রমণ করে, ১৯৪৫ সালে USA জাপানে পারমাণবিক হামলা করে লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করে। এ ঘটনার কয়েক বছর পর থেকেই জাপান যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে ভালো বন্ধুতে পরিণত হয়েছে। (গ) ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে SEATO চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের পক্ষে ও ভারতের বিপক্ষে ছিল, বর্তমানে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সামরিক চুক্তি সহ অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ চুক্তি করেছে। তাই বলা যায় ১৯৭১ সালে ভারত ভারতের স্বার্থেই বাংলাদেশকে সাহায্য করেছ, আমরা আমাদের স্বার্থেই সাহায্য নিয়েছি। তাই ভারতের সম্ভাব্য আগ্রাসন মোকাবেলা করতে চীন পাকিস্তান ও আফগানস্তানের সাথে জোট করতে হবে।
৬। পরবর্তী বিশ্ব যুদ্ধ হতে পারে ধর্ম কেন্দ্রীক, মুসলিম বিশ্বে তালেবান, আল কায়দা, জেএমবি, বুকু হারাম, আল শাবাব, ব্রাদারহুড, হিজবুল্লহ,হামাস যেমন জনপ্রিয় হচ্ছে তেমনিভাবে বিজেপি, শিবসেনা,ইজরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র কট্টরপন্থী মোদী,নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের মতো লোকদের নেতা হিসেবে নির্বাচিত করছে সেই সাথে পশ্চিমা বিশ্বে মুসলিম বিদ্বেষও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমার ধারণা ৩য় বিশ্বযুদ্ধ বা ৫ম আরব ইজরাইল যুদ্ধের কেন্দ্র হবে অবশ্যই জেরুজালেমে, হতে পারে এই যুদ্ধের মধ্যবর্তী পর্যায়ে ইজরায়েলের পক্ষে নেতৃত্ব দিবেন দাজ্জাল এবং মুসলিম বিশ্বের পক্ষে নেতৃত্ব দিবেন ইমাম মেহেদী ও ঈসা ইবনে মারিয়াম, যুদ্ধের প্রেক্ষাপট কিন্তু শুরু হয়েগেছে। (ক) ১৯৬৭ সালে ইজরাইল মসজিদুল আকসা দখল করে এবং ১৯৬৯ সালে এই মসজিদে অগ্নি সংযোগ করলে মুসলিম বিশ্ব একত্রিত হয়ে OIC গঠন করে। OIC ঘোষণা দেয় যেদিন মুসলমানরা ফিলিস্তিন উদ্ধার করতে পারবে সেদিন থেকে OIC ‘র দপ্তর হবে জেরুজালেমে, অন্য দিকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ইজরায়েল জেরুজালেমকে রাজধানীর ঘোষনা দেয় এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প তা স্বীকৃতি দেন, তার মানে জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রণ ই পরবর্তী বিশ্ব রাজনীতি ও বিশ্ব যুদ্ধ। অর্থাৎ ইসলাম বনাম অন্য বিশ্ব।
৭। সৌদি আরবের নেতৃত্ব পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে, জাতীয়তাবাদ ও আঞ্চলিকতাবাদ ধারনার অবসান ঘটিয়ে, আরবী, তুর্কী,কুর্দী,হাবসী,তাতারী, পারসী, আফগানী,পাঠানি,আজনবী, অআরবী মুসলীম জাতিগোষ্ঠীগুলি ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইজরাইল ও ইজরায়েলের সমর্থন কারীদের উপর প্রতিরোধ গড়ে তুলবে, যা ইমাম মেহেদীর নেতৃত্বের পথকে সুগম করবে।
৮। Sea of Galilee ‘র পানি অনেকটাই শুকিয়ে যাচ্ছে, ফোরাত নদীর স্রোত মরে গেছে, গাজওয়াতুল হিন্দর গন্ধ পাচ্ছি কারন ভারতে মোদী বাহিনী জোর করে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে বাধ্য করছে। অনেক দেশেই সমকামী বিবাহের বৈধতা দিয়েছে, নারী নির্যাতন ও নারীদের ব্যাপক ক্ষমতায়ন উভয়ই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুদ, ব্যাভিচার, দুর্নীতি এ সব অপরাধ সামাজিক স্বীকৃতি পেয়েছে। পঙ্গপালের আক্রমন বৃদ্ধিপাচ্ছে। কোরান হাদীসের আলোকে এই অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ইমাম মেহেদী ও ঈসা ইবনে মারিয়ামের আগমনের সময় খুব নিকটে।
৯। করোনা মহামারির পরবর্তী বিশ্ব যেহেতু সাংঘাতিক সংঘাতপূর্ন, এ সময়ে কোয়ারান্টাইনে ধ্যানে মগ্ন হয়ে সৃষ্টি কর্তার নিকট তওবা করতে হবে খাটি মানুষ হওয়ার জন্য,যাতে পরবর্তী নয়া বিশ্ব ব্যবস্থায় ইমাম মেহেদির সত্যের সৈনিক হিসেবে কাজ করতে পারি।
লেখকঃ মোয়াজ্জেম হোসাইন
নৃবিজ্ঞানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
এডভোকেট,জজকোর্ট @ হাইকোর্ট
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গবেষক
০১৭১৬ ৮৫৮ ৩৩১
Leave a Reply